পাকিস্তানি সামরিক বিমান দ্বারা ব্যবহৃত গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (জিএনএসএস) সংকেত ব্যাহত করার জন্য ভারত তার পশ্চিম সীমান্তে উন্নত জ্যামিং সিস্টেম মোতায়েন করছে। সূত্রের খবর, এর জেরে তাদের নেভিগেশন এবং স্ট্রাইক ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে ধাক্কা খেতে পারে। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, এই স্থাপনাটি জিপিএস, গ্লোনাস এবং বেইদুসহ একাধিক স্যাটেলাইট-ভিত্তিক নেভিগেশন প্ল্যাটফর্মে হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম, যেগুলো সবই পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত হয়।
৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত ভারত পাকিস্তান-পরিচালিত সমস্ত ফ্লাইটের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়ার পর এই সিস্টেমগুলি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জ্যামিং সিস্টেমগুলো যেকোনো সম্ভাব্য সংঘাত বা অনুপ্রবেশের সময় পাকিস্তানের পরিস্থিতিগত সচেতনতা, নির্ভুল লক্ষ্যবস্তু এবং যুদ্ধাস্ত্রের কার্যকারিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
২২শে এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছে, যে হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর জবাবে, ভারত একটি নোটাম (বিমানকর্মীদের জন্য নোটিশ) জারি করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তান কর্তৃক নিবন্ধিত, পরিচালিত বা লিজ নেয়া সমস্ত বিমানের জন্য তার আকাশসীমা সীমাবদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে বাণিজ্যিক বিমান সংস্থা এবং সামরিক বিমানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য ভারতীয় প্রতিশোধের আশঙ্কায় পাকিস্তানি বিমান সংস্থাগুলো ভারতীয় আকাশসীমা এড়িয়ে চলার জন্য রুট পরিবর্তন শুরু করার পরপরই NOTAM জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়ার পর, পাকিস্তানি বিমান সংস্থাগুলোকে কুয়ালালামপুরের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শহরগুলোতে পৌঁছানোর জন্য চীন বা শ্রীলঙ্কার আকাশসীমা ব্যবহার করে দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল রুট ব্যবহার করতে বাধ্য করা হবে।
পেহেলগাম হামলার পর ভারতের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের একটি অংশ হিসেবে আকাশসীমা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভারত এর আগে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে। ৩২টি বিমানের বহর বিশিষ্ট জাতীয় বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দূর প্রাচ্যে পাকিস্তানের অনেক ফ্লাইটের গন্তব্যে পৌঁছাতে এখন এক থেকে দুই ঘন্টা বাড়তি সময় লাগবে। এই পরিবর্তনের ফলে আরও জ্বালানির প্রয়োজন হবে, ক্রুদের কাজের সময় বৃদ্ধি পাবে। বিপরীতে, ইন্ডিগোর মতো ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো ৩৭০ টিরও বেশি বিমান পরিচালনা করে, এয়ার ইন্ডিয়ার রয়েছে ২০০ টিরও বেশি বিমান।
সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
খুলনা গেজেট/এনএম